জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, জাতি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একটা বিশাল পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের নমুনা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা রাজনীতি কী করছি, অতীতে কী করেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব- এর একটা ধারণা থাকা দরকার। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে মামলার আসামি করা হচ্ছে। এটা মোটেই কাম্য নয়। আমরা জনগণের সঙ্গেই ছিলাম। জনগণ পরিবর্তন আশা করে বুকের রক্ত দিয়ে আওয়ামী সরকারকে উৎখাত করেছে।
কতিপয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে, যা পরিবর্তনের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণ এটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। আগে অনেকেই অনেক কথা বলেননি, এখন কথা বলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন দেশে থেকে, দেশের বাইরে থেকে অনেকেই অনেক কথা বলছেন বা বলার চেষ্টা করছেন। আমরা কিন্তু বরাবরই দেশে থেকে, জনগণের পাশে থেকে জনগণের কথা বলেছি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি, লাগামহীন স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি-দুঃশাসনের জন্য। ছাত্রদের এ আন্দোলনেও আমরা প্রথমদিন থেকেই ছাত্রদের সঙ্গে ছিলাম। সংসদেও আমরা বলেছি, কোটাপ্রথা সংবিধানসম্মত নয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জনসভায় আমরা কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছি। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কোটা আন্দোলন দমন করার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম।
জাতীয় পার্টি দলীয়ভাবে কোটা আন্দোলনকে সমর্থন করে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। আমিই প্রথম ছাত্রদের বীর মুক্তিসেনা হিসাবে অভিহিত করেছি। আন্দোলনে আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আবু সাঈদের মায়ের সঙ্গে দেখা করেছি এবং রংপুরের জনগণকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করেছি। রংপুরে আমাদের দলের কর্মী নিহত হয়েছেন, জেল খেটেছেন। আমাদের রংপুরের মেয়রকে হয়রানি করার চেষ্টা হয়েছে।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিপক্ষরা ’৯০-এর পর থেকে আমাদের ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমাদের ওপর নির্যাতন ও বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম, কখনো কারও দোসর ছিলাম না। আমরা সব সময় জনগণের জন্য কাজ করেছি। আমরা জনগণের জন্য কথা বলেছি। যার জন্য দীর্ঘ ৩৭ বছর পরও জাতীয় পার্টি জনগণের মধ্যে টিকে আছে। আমরা যে কোনো সময় যে কোনো নির্বাচনে গেলে ভালো ফল করব।
জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, মো. মোস্তফা মহসিন, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর হোসেন, সুলতান আহমেদ সেলিম, মো. শফিউল্লাহ শফি, শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এমএ রাজ্জাক, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন।
এর আগে সকালে ড. ইরফান বীন তুরাব আলীর সভাপতিত্বে ও মুফতি ফিরোজ শাহের পরিচালনায় জাতীয় ওলামা পার্টির এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।