রংপুর প্রতিনিধী:- রংপুরের কাউনিয়া, গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছিল। বর্তমানে কাউনিয়ার তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু কাউনিয়া তিস্তা ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ। তিস্তা নদী বেষ্টিত কাউনিয়া উপজেলার গদাই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বর্ষা মৌসুমের আগে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
গদাই এলাকার ভাঙ্গন আতঙ্কে আছেন আজিজুল, হাফেজ, শুরুজ আলি, তারা মিয়া, বাবুল, শহিদুল, রাজ্জাক, ফুল মিয়া, আলেফ, শাহিন, মোস্তাক, আমজাদ, ওসমান, রফিকুলসহ অনেকেই জানান, কয়েক দফা নদীতে ভেঙ্গে গেছে বসতভিটা। এবার ভাঙলে আর কিছু থাকবে না। বাধ্য হয়ে বাধের উপর অথবা অন্য কোথাও স্থান নিতে হবে। সংসারই চলে না, তাতে আবার প্রতি বছরে বছরে বাড়িঘর ভাঙে।
এদিকে তিস্তায় পানি কমায় চরের ঢুষমারা, তালুক শাহবাজ, গদাই, পূর্ব নিজপাড়ার অংশ, গোপীডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর প্রাননাথ, শনশনিয়া, চর হয়বতখাঁ, চর গনাই, আজমখাঁর চর গ্রামের নিম্ন এলাকায় পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু আমন ধানের বীজতলা ও উঠতি বাদামসহ শতাধিক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব মৎস্য খামারীসহ কৃষকেরা।
গদাই গ্রামের ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই এলাকা ১৫শত মিটার তার মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা পরিষদ মিলে ৬০০ মিটারের কাজ জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে করা হয়েছে।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনসার আলী বলেন, নদীর পানি কমলেও নদীর ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। ভাঙন এলাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আমরা পরিদর্শন করেছি । কিছু বস্তায় বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ফেলা হয়েছে আরো ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত
হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, দেশেরউত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি ও ৪৮ থেকে ৭২ঘন্টায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে করে আবারও দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।