স্টাফ রিপোর্টার মোঃদেলোয়ার হোসেন :- মোবাইল অ্যাপ (উই চ্যাট) এর মাধ্যমে পরিচয়, তারপর প্রেম অতঃপর বিয়ে। আর এভাবেই যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে সুদূর চীন দেশের সাং সাই এর বাসিন্দা লি সি জাং-কে বিয়ে করেছেন নাটোরের মেয়ে ফাতেমা খাতুন।
বাংলাদেশে আসার পর ধর্ম পরিবর্তন করে মো. আলী নাম নিয়ে মুসলিম রীতিতে বিয়ে করেন এই চীনা যুবক। অভূতপূর্ব এই প্রেমের বিয়েতে ফাতেমা-আলীও খুশি। খুশি ফাতেমার পরিবার ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭লাখ টাকা দেন মোহর ধার্য করে মুসলিম রীতিতে তাদের বিয়ে হয়। রোববার নাটোর আদালতেও রেজিস্ট্রারি করে তাদের বিয়ে হয়। ফাতেমা খাতুন সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে ও নাটোর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের ইসলামী ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী।
ফাতেমা খাতুন বলেন, আমাকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছে। সে আমার জন্য তার নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। এ সময় তিনি তার স্বামীর সাথে তাদের (চীন) দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
ফাতেমা আরও জানান, ৬ মাস আগে মোবাইল অ্যাপের (উই চ্যাট) মাধ্যমে পরিচয় হয় চীনের সাং সাই এর বাসিন্দা লি সি জাংয়ের সাথে। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব। তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে নাটোরে এসে তাকে বিয়ে করেন চীনের সাং সাই এলাকার বাসিন্দা লি সি জাং।
নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে লি সি জাং ওরফে মো. আলী বলেন, আমি ফাতেমাকে বিয়ে করতে পেরে খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য ধর্ম পরিবর্তন করেছি। আশা করি আমরা সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে পারব।
মেয়ের পরিবার জানায়, বাংলাদেশি তরুণীর ভালোবাসা পেতে নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন চীনা যুবক লি সি জাং। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের চীন থেকে ফাতেমার বাড়িতে আসেন লি সি জাং। বৌদ্ধ ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হয়ে মো. আলী নাম নিয়ে বিয়ে করেছেন ফাতেমা খাতুনকে।
ফতেমা খাতুনের পিতা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে বিদেশি পুরুষকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করায় স্থানীয়ভাবে বিয়ের প্রস্তাব আসলেও সে রাজি হয়নি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছে। তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধানে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। রোববার নাটোর আদালতের মাধ্যমেও তাদের বিয়ে হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালু বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়েছে জেনেছি। মেয়েটি শিক্ষিত, আগে থেকেই চীনা ভাষা শিখত। বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়েরা এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছে। এ ঘটনা বিভিন্ন এলাকায় ঘটলেও আমাদের এলাকায় এটায় প্রথম। তিনি নবদম্পতির সুখী পরিবার হওয়ার দোয়া করেন।