পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, চকলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো যতই মুখরোচক আর সু্স্বাদু হোক, মস্তিষ্কের জন্য তা উপকারী নয়৷ মস্তিষ্কের জন্য ভিটামিন এ, সি এবং ই-এর গুরুত্ব অপরিসীম৷
অফিসে কাজের ফাঁকে, মিটিং-এর মাঝখানে চকোলেট খেতে ভালোবাসেন বুঝি আপনি? সেই সাথে দিনে দু‘চার বার বেশ ভালো করে দুধ চিনি মিশিয়ে চা বা কফি না হলে চলে না আপনার? আর সুযোগ পেলেই বার্গার, হটডগ এবং নানাবিধ স্ন্যাকস খেতে বড় ভালো লাগে? হ্যাঁ, পুষ্টিবিদেরা আপনাকেই সতর্ক করছেন৷
চকলেট, স্ন্যাকস এবং অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খুবই মুখোরোচক বটে কিন্তু এ ধরনের খাদ্য মস্তিষ্কের জন্য খুব একটা উপকারী নয় বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা৷ তারা বলছেন, মস্তিষ্ককে সতেজ, চাঙ্গা ও স্থির রাখতে প্রয়োজন কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন এ, সি ও ভিটামিন ই জাতীয় খাবার৷
মানুষ যখন কাজের খুব চাপের মধ্যে থাকে তখন শরীর থেকে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়৷ফলে মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়৷ আর এসময় চকোলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ খুব দ্রুত বাড়ে এবং শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে৷
ভিয়েনার পুষ্টিবিজ্ঞানী ইনগ্রিড কিফার বলছেন, রক্তে সুগারের পরিমাণকে খুব দ্রুত বাড়িয়ে দেয় চকলেট, ফলে এটি মস্তিষ্কে এক ধরণের সুখবোধ তৈরি করে৷ কিন্তু এই চাঞ্চল্য বা সুখবোধের অনুভুতি আবার বিলীনও হয়ে যায় খুব দ্রুত৷ অর্থাৎ চকলেট থেকে পাওয়া কর্মচাঞ্চল্য খুবই ক্ষণস্থায়ী৷ ফলে, অল্প সময়ের মধ্যই মানুষ আবার শ্রান্ত, অবসন্ন ও উদ্যমহীন হয়ে যেতে পারে৷ তাই, দীর্ঘস্থায়ী কর্মচাঞ্চল্যের জন্য কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন কিফার৷
কিফার আরো বলছেন যে, চকোলেট বা গ্লুকোজের মতো খাবার রক্তে খুব দ্রুত মিশে যায়৷ কিন্তু কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারগুলো পরিপাকতন্ত্রে একটু সময় নিয়ে হজম হওয়ার প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করে৷ এর ফলে রক্তে সুগারের পরিমাণ দীর্ঘ সময় ধরে স্থির থাকে এবং কাজে মনোযোগ ধরে রাখা যায় দীর্ঘ সময়৷
পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, শস্যকণা, যব, জই, আলু, গম, শিম, মটরশুঁটি, ফল এবং সবজি জাতীয় খাবারগুলো মস্তিষ্ককে প্রচুর পরিমাণ কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট
যোগায়৷ এছাড়া বাদাম, চীনা বাদাম, চীনা বাদামের তেল, সামুদ্রিক মাছ যেমন – হেরিং, ম্যাকারেল, টুনা ও স্যামন মাছও মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে বেশ উপকারী৷ কারণ এই খাবারগুলোতে আছে এমন এক ধরণের অ্যাসিড, যা স্ট্রোক এবং এই জাতীয় নানা রোগের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে৷